২৪ এপ্রিল ২০২৪ / ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১২:৫২/ বুধবার
এপ্রিল ২৪, ২০২৪ ১২:৫২ অপরাহ্ণ

সুনামগঞ্জে বন্যার অবনতি: নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৮১ সে.মি উপর দিয়ে বইছে

     

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা 
ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে পথ, ঘাট, ফসলি জমি। ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢল অব্যাহত থাকায় জেলার ৭টি উপজেলা প্রত্যেকটি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা জেলা শহরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, রবিবার সকাল ১০টায় সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে ১১ সে.মি. পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮১ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, রোপা আমনের ৬শ ৬৫টি হেক্টর বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও প্রায় ৪ হাজার হেক্টর রুপা আমনের ফসল তলিয়ে গেছে। বালিজুড়ী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মিলন রায় জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে রক্তিনদীর পাশ্ববর্তী আনোয়ারপুর বাজার ব্রীজ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও আনোয়ারপুর ও শক্তিয়ারকলা সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে পাকা রাস্তার ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার ৬টি উপজেলার বাজারগুলোর দোকানপাট তলিয়ে গিয়ে বাজার হাট বন্ধ রয়েছে। তবে প্লাবিত হওয়া এলাকাগুলোতে খেটে খাওয়া মানুষেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মেঘালয় পাদদেশসহ ভারতে বর্ষারোহী মৌসুুমি বায়ু জোরালো রয়েছে। সীমান্তবর্তী নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন নতুন এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে বেকার হয়ে পড়ছে জেলার লক্ষাধিক মানুষ। বন্যার অবনতি হয়ে বাড়ি ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার। স্থানীয়রা জানিয়েছেন এমন দুর্যোগের সময় জনপ্রনিধিরা দুরে সরে দাড়িয়েছেন। তারা কেউই পানিবন্দি কিংবা আশ্রয়হীন মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। তাহিরপুর উপজেলার কাদির মিয়া বলেন, ভোট দেওয়ার সময় মেম্বার, চেয়ারম্যানরা বাড়িতে এসে ধরে। আর আমরা বিপদে পড়লে তারা সাহায্যতো বড় দুরের কথা একবার আইসা দেখারই সুযোগ পায়নি। তিনি আরো বলেন, বন্যার কারনে আমরা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছি। এখনো পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। তবে জেলা প্রশাসন সুত্র জানিয়েছে, বন্যায় পানিবন্দি মানুষের জন্য জেলার ১১ টি উপজেলায় ৩ মেট্রিকটন করে জি.আর চাল ও শুকনো খাবারের জন্য ১০ হাজার করে জি.আর ক্যাশ দেয়া হয়েছে। তবে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস জানান, ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢল নেমে এসে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৮১ সে.মি উপর দিয়ে বইছে। জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জে বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হচ্ছে। তবে বন্যায় পানিবন্দি মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এদিকে চেয়ারম্যান, মেম্বাররা কোনো সহায়তা না দিলেও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন ব্যাক্তিগত ভাবে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পানিবন্দি মানুষকে শুকনো খাবার ও ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply